হাদীস: “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও ধন-সম্পদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি।”
«إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ».
[صحيح] - [رواه مسلم] - [صحيح مسلم: 2564]
المزيــد ...
আবূ হুরাইরা রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও ধন-সম্পদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি।”
[সহীহ] - [এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।] - [সহীহ মুসলিম - 2564] ব্যাখ্যা
এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বান্দার বাহ্যিক চাল-চলন, চেহারা ও শরীরের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না যে, এগুলো সুন্দর নাকি অসুন্দর? এগুলো বড় নাকি ছোট? এগুলো সুস্থ নাকি অসুস্থ? এবং আল্লাহ তাদের ধন-সম্পদের প্রতিও দৃষ্টিপাত করেন না। তাদের সম্পদ বেশি না কম? এসব বিষয়ের ব্যাপারে আল্লাহ তাঁর বান্দাহকে পাকড়াও করবেন না এবং এগুলো বেশি-কম হওয়ার কারণে কারো হিসেবও নিবেন না। তবে তিনি দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তাদের অন্তরের এবং এতে যে তাকওয়া, ইয়াকীন, সততা, একনিষ্ঠতা অথবা লৌকিকতা ও সুনাম-সুখ্যাতি অর্জনের ইচ্ছা করা হয়েছে কী না সেগুলোর প্রতি। এছাড়াও তিনি দৃষ্টিপাত করে থাকেন তাদের আমলের প্রতি, সেগুলো কতটুকু পরিশুদ্ধ বা অপরিশুদ্ধ। ফলে কর্মটি বিশুদ্ধ হলে তিনি সাওয়াব প্রদান করেন এবং অশুদ্ধ হলে তাকে শাস্তি প্রদান করেন।
হাদীসের শিক্ষা
- অন্তরের সংশোধন এবং সকল প্রকারের নিন্দনীয় কাজ থেকে অন্তরকে পবিত্র করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
- ইখলাসের মাধ্যমে অন্তরের পরিশুদ্ধতা এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের মাধ্যমে আমলের পরিশুদ্ধতা হলো আল্লাহর দৃষ্টি ও বিবেচনার স্থান।
- সুতরাং মানুষ যেন তার ধন-সম্পদ, সৌন্দর্য, শারীরিক শক্তি এবং এ দুনিয়ার বাহ্যিক চাকচিক্যের কারণে ধোকায় না পড়ে।
- অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি সংশোধন না করে বাহ্যিক বিষয়সমূহের উপর জোর দেওয়া থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
আরো
- হাদীস: ‘আমি সমস্ত অংশীদারদের অংশীদারি [শিরক] থেকে মুক্ত। যদি কেউ এমন আমল করে যাতে সে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করেছে, তাহলে আমি তাকে ও তার শির্ককে বর্জন করি।
- হাদীস: নিশ্চয় মহান আল্লাহ ঈর্ষা করেন এবং আল্লাহর ঈর্ষা হচ্ছে যখন মানুষ আল্লাহ কর্তৃক হারামকৃত কোন কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
- হাদীস: যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই, আর মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল এবং ঈসা আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল, আর তাঁর বাণী যা তিনি মারইয়ামের মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন এবং তাঁর রূহ। আর জান্নাত সত্য ও জাহান্নাম সত্য। তাকে আল্লাহ তাআলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; তাতে সে যে কর্মই করে থাকুক না কেন।
- হাদীস: দু’জন মুসলিম যখন তাদের তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামী।
- হাদীস: নিশ্চয় আল্লাহ পুণ্যসমূহ ও পাপসমূহ লিখে দিয়েছেন। অতঃপর তিনি তার ব্যাখ্যাও করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি কোনো নেকী করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত করতে পারে না, আল্লাহ তাবারাকা অতা‘আলা তার জন্য (কেবল নিয়ত করার বিনিময়ে) একটি পূর্ণ নেকী লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর কাজটি করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুণ, বরং তার চেয়েও অনেক গুণ নেকী লিখে দেন।
- হাদীস: সব কাজ (এর প্রাপ্য) হবে নিয়্যাত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।
- হাদীস: একদা আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের কাছে এসে হাযির হলেন। তাঁর পরিধানের কাপড় ছিল সা’দা ধবধবে, মাথার কেশ ছিল কাল কুচকুচে। তাঁর মধ্যে সফরের কোনো চিহ্ন ছিল না। আমরা কেউ তাঁকে চিনি না।