عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
«سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ تَعَالَى فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ: إِمَامٌ عَدْلٌ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ اللَّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي المَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ، اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ: إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا، فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ».
[صحيح] - [متفق عليه] - [صحيح البخاري: 1423]
المزيــد ...
আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা এমন একদিন (কিয়ামতের দিন) তাঁর ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া অবশিষ্ট থাকবে না।
(১) ন্যায়পরায়ণ ইমাম (জনগণের নেতা),
(২) ঐ যুবক, যে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে মশগুল থেকে বড় হয়েছে,
(৩) সে ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের সাথে লেগে রয়েছে (অর্থাৎ জামা’আতের সাথে সালাত আদায়ে যত্নবান),
(৪) সে দু’ব্যক্তি, যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালোবাসে ও পরস্পর মিলিত হয় এবং এ জন্যই (পরস্পর) বিচ্ছিন্ন হয়,
(৫) যে ব্যক্তিকে কোন অভিজাত এবং সুন্দরী রমণী (ব্যভিচারের জন্য) আহ্বান জানায় আর তার জবাবে সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি,
(৬) যে ব্যক্তি এতটা গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কী দান করে তা তার বাম হাত টের পায় না এবং
(৭) যে ব্যক্তি একাকী বসে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার চোখ দু’টো (আল্লাহর ভয় বা ভালোবাসায়) অশ্রুপাত করে।”
[সহীহ] - [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।] - [সহীহ বুখারী - 1423]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাত প্রকার মুমিনকে সুসংবাদ দিয়েছেন, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। এই সাত প্রকার মুমিন হলেন: প্রথম: ন্যায়পরায়ণ শাসক। তিনি নিজে ন্যায়নিষ্ঠ ও পবিত্র চরিত্রের অধিকারী, ফাসেক নন। তিনি তার প্রজাদের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাদের প্রতি জুলুম করেন না। তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী, অর্থাৎ তিনি হলেন প্রধান শাসক বা ইমাম। এছাড়াও, মুসলিমদের যেকোনো বিষয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তিও যদি ন্যায় ও ইনসাফের সাথে দায়িত্ব পালন করেন, তবে তিনি এই গুণের অধিকারী হবেন। দ্বিতীয়: সে যুবক যে আল্লাহর ইবাদতে লালিত-পালিত হয় এবং তার যৌবন ও শক্তিকে আল্লাহর পথে ব্যয় করে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত সে এই পথে অবিচল থাকে। তৃতীয়: সে ব্যক্তি যার হৃদয় মসজিদের সাথে লেগে থাকে। এই ব্যক্তি মসজিদ থেকে বের হলেও তার হৃদয় সবসময় মসজিদের দিকে ঝুঁকে থাকে। মসজিদের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা এবং এর সাথে নিয়মিত সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে তার মন সর্বদা মসজিদের দিকে নিবদ্ধ থাকে। শারীরিকভাবে মসজিদের বাইরে থাকলেও তার হৃদয় ও চিন্তা মসজিদের মধ্যে নিমগ্ন থাকে। চতুর্থ: সে দুজন ব্যক্তি যারা একে অপরকে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসে এবং এই ভালোবাসা দ্বীনের ভিত্তিতে অব্যাহত রাখে। তারা পার্থিব কোনো কারণে এই ভালোবাসা ছিন্ন করে না, বরং তাদের মধ্যে এই ভালোবাসা মৃত্যু পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তারা বাস্তবে একত্রিত হোক বা না হোক, তাদের হৃদয় সবসময় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে। পঞ্চম: এমন একজন ব্যক্তি যাকে একজন নারী নিজের দিকে আহ্বান করেছে অশ্লীল কাজ করার জন্য, এবং সেই নারী মর্যাদা, সম্মান, বংশগত গৌরব, প্রভাব, সম্পদ ও সৌন্দর্যের অধিকারী। কিন্তু সে ব্যক্তি তা প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে: "আমি আল্লাহকে ভয় করি।" ষষ্ঠ: এমন একজন ব্যক্তি যে সামান্য বা বেশি পরিমাণে সদকা করেছে, কিন্তু লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে তা করেনি। বরং সে তা গোপনে দিয়েছে, এমনকি তার বাম হাতও জানে না তার ডান হাত কী দান করেছে। সপ্তম: এমন একজন ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে, হয় অন্তরে স্মরণ করে অথবা জিহ্বা দ্বারা জিকির করে, এবং আল্লাহর ভয়ে ও তাঁর মহিমার সম্মানে তার চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হয়।