عن إبراهيم بن عبد الرحمن بن عوف، أن عبد الرحمن بن عوف رضي الله عنه أُتي بطعام وكان صائمًا، فقال: قُتِل مُصعب بن عمير رضي الله عنه وهو خيرٌ مني، فلم يوجد له ما يُكفَّن فيه إلا بُردة إن غُطِّيَ بها رأسه بَدَت رِجْلاه؛ وإن غُطِّيَ بها رجلاه بدا رأسه، ثم بُسِط لنا مِنَ الدنيا ما بُسِط، أو قال: أُعْطِينا من الدنيا ما أُعطِينا، قد خَشِينَا أن تكون حَسَنَاتُنا عُجِّلَت لنا، ثم جعل يبكي حتى ترك الطعام.
[صحيح] - [رواه البخاري]
المزيــد ...
ইবরাহীম ইবন আব্দুর রহমান ইবন ‘আওফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একদিন আব্দুর রহমান ইবন আওফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে খাবার আনা হলো, তখন তিনি সাওম পালন করছিলেন। তিনি বললেন, ‘মুস‘আব ইবন উমাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু শহীদ হলেন। আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে ভালো। (অথচ) তাঁকে কাফন দেওয়ার মতো একটি চাদর ভিন্ন কিছু পাওয়া যায় নি, যা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা দু’টি বের হয়ে যাচ্ছিল এবং পা দু’টি ঢাকলে মাথা বের হয়ে যাচ্ছিল! তারপর আমাদের জন্য দুনিয়া যা প্রসারিত করার তা প্রসারিত করা হলো, অথবা তিনি বললেন, আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে যা দেওয়ার সবই দেওয়া হয়েছে। এমনকি আমরা আশংকা করছি যে, আমাদের সৎকর্মগুলো (বিনিময়) আগেই (এ দুনিয়াতে) দিয়ে দেওয়া হয় নি তো? অতঃপর তিনি এমনভাবে কাঁদতে থাকলেন যে খাবারও ছেড়ে দিলেন।’
[সহীহ] - [এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।]
হাদীসটির অর্থ: আব্দুর রহমান ইবন আওফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একদিন সিয়াম পালন অবস্থায় ছিলেন। যখন ইফতারের সময় হলো তখন তার জন্য খাবার আনা হলো। সাওম পালনকারী সাধারণত খাবারের প্রতি আগ্রহী হয়। কিন্তু তিনি প্রথম যুগের সাহাবীদের কথা স্মরণ করলেন। তিনি নিজেও প্রথম যুগের মুহাজির সাহাবীদের একজন ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেকে খাটো করে বললেন, মুস‘আব ইবন উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন আমার চেয়ে ভালো লোক। নিজেকে খাটো করে ও বিনয় অবলম্বন করে অথবা সবর ও দারিদ্রতাকে অবলম্বনের দিক বিবেচনায় তিনি তাকে উত্তম বলেছেন। অন্যথায় আলেমগণ এ কথা স্পষ্ট করেছেন যে, সু-সংবাদ প্রাপ্ত দশজন সাহাবী অন্যান্য সাহাবীর তুলনায় উত্তম। মুস‘আব ইবন উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মক্কায় তার মাতা পিতার নিকট থাকতো। তার মাতা পিতা ছিল প্রাচুর্যের মালিক। তারা তাকে অতি উত্তম পোশাক পরিধান করাতো: যুবক ও নাওজোয়ানদের পোশাক। তারা তাকে অনেক বেশি আদর করত। যখন ইসলাম গ্রহণ করল, তার মাতা পিতা তাকে ত্যাগ করল, আর তিনি রাসূলুল্লাহর সাথে হিজরত করলেন এবং মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত হলেন। তার গায়ে ছিল একটি বেমানান কাপড়, অথচ মক্কায় থাকা কালে তার পিতামাতার কাছে তিনি সবচে’ সুন্দর কাপড় পরিধান করতেন। কিন্তু এ গুলো সব ছেড়ে দিয়ে তিনি আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে হিজরত করলেন। আল্লাহর রাসূল উহুদের যুদ্ধে তার হাতে ঝাণ্ডা তুলে দিলেন এবং তিনি শহীদ হলেন। আর তার সাথে ছিল কেবল একটি চাদর, যা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা দু’টি বের হয়ে যাচ্ছিল কাপড়টি ছোট হওয়ার কারণে এবং পা দু’টি ঢাকলে মাথা বের হয়ে যাচ্ছিল! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দ্বারা মাথা ঢাকার নির্দেশ দিলেন। আর দুই পা প্রসিদ্ধ ঘাস ‘ইযখির’ দিয়ে ঢাকার নির্দেশ দিলেন। আব্দুর রহমান ইবন আওফ এ সাহাবীর কথা স্মরণ করলেন তারপর তিনি বললেন, তারা চলে গেছেন এবং তাদের পরে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদ ও অসংখ্য গনীমত যা উন্মুক্ত করেছেন তা থেকে তারা নিরাপদ ছিলেন। যেমন আল্লাহ বলেন, “অসংখ্য গনীমত যা তারা গ্রহণ করে।” [সূরা আল-ফাতহ,আয়াত: ১৯] তারপর আব্দুর রহমান ইবন আউফ বলেন, আমরা ভর করছি আমাদের সৎকর্মগুলো (বিনিময়) আগেই দেওয়া হয় নি তো? অর্থাৎ আমরা ভয় করছি যাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে: “যে দুনিয়া চায় আমি সেখানে তাকে দ্রুত দিয়ে দেই, যা আমি চাই, যার জন্য চাই। তারপর তার জন্য নির্ধারণ করি জাহান্নাম, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত, বিতাড়িত অবস্থায়।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১৮] আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হই কিনা? অথবা আল্লাহ তাআলার বাণী-“তোমরা তোমাদের দুনিয়ার জীবনে তোমাদের সুখ সামগ্রীগুলো নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ।” এর অন্তর্ভুক্ত হই কিনা। যেমনটি উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে। আর যেহেতু সাহাবায়ে কিরামের আল্লাহর ভয় অধিক ছিল, তাই ‘আব্দুর রহমান ইবন ‘আওফ আশংকা করলেন যে, দুনিয়াতে তার নেক আমলসমূহের প্রতিদান দিয়ে দেওয়া হলো কিনা? তাই তিনি ভয় ও আতঙ্কে কেঁদে ফেলেন যে, হয়তো তিনি তার পূর্বে চলে যাওয়া নেককার লোকদের সাথে মিলিত হতে পারবেন না। অতঃপর তিনি তখনকার খাবার খাওয়াও ত্যাগ করলেন।