عن شكل بن حميد رضي الله عنه قال: قلت: يا رسول الله، عَلِّمْنِي دعاء، قال: (قل: اللهم إني أعوذ بك من شر سمعي، ومن شر بصري، ومن شر لساني، ومن شر قلبي، ومن شر مَنِيِّي).
[صحيح] - [رواه أبو داود والترمذي والنسائي وأحمد]
المزيــد ...
শাকাল ইবন হুমাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে দিন।’ তিনি বললেন, (বল, ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন শার্রি সাম্য়ী, ওয়া মিন শার্রি বাসারী, ওয়া মিন শার্রি লিসানী, ওয়া মিন শার্রি ক্বালবী, ওয়া মিন শার্রি মানিইয়্যী।) “হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট আমার কর্ণ, চক্ষু, রসনা, অন্তর এবং বীর্য (যৌনাঙ্গে)র অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।”
[সহীহ] - [এটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। - এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন। - এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।]
শাকাল ইবন হুমাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ খুঁজতে গেলেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ধ্বংসশীল দুনিয়া, কিছু অর্থ এবং সা‘ পরিমাণ খাদ্যও চান নি। তিনি তাঁর কাছে দো‘আ শিখতে গেলেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এমন কিছু দো‘আ শিখতে গেলেন যার মধ্যে তিনি দুনিয়া ও আখেরাতে উপকার পাবেন। আর এটি হলো সাহাবায়ে কেরামের মূল বৈশিষ্ট্য, তারা আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এই মহান দো‘আর দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। অতঃপর তিনি তাকে বললেন, “বল, আল্লাহুম্মা ইন্নী” অর্থাৎ তিনি আল্লাহ নামের মাধ্যমে যা আল্লাহ তা‘আলার সকল নান্দনিক নাসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করে তা দিয়ে আল্লাহর কাছে চেয়েছেন এবং তাঁর অভিমুখী হয়েছেন। “আমি তোমার নিকট আমার কর্ণের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।” আঊযু: অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আমি কর্ণের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আর তা হলো, মানুষের কর্ণ যে সকল পাপে লিপ্ত হয়। যেমন, মিথ্যা সাক্ষ্য, কুফুরী কথা, অপবাদ, দীনের বদমান এবং মানুষের কর্ণ যে সকল হারামে লিপ্ত হয় তার সব থেকে পানাহ চাই। “আমার চক্ষুর অনিষ্ট থেকে” আর তা হচ্ছে তার চক্ষুকে হারামের দিকে নিবন্ধ করা; যেমন, খারাপ ফিল্ম ও খারাপ দৃশ্য।“ আমার রসনার অনিষ্ট থেকে” অর্থাৎ এমন হারাম কাজ যা জবান থেকে বের হয়। যেমন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, গালি দেওয়া, লা‘নত করা, দীন এবং দীনদারের ব্যাপারে খারাপ মন্তব্য করা অথবা এমন কথা বলা যা মানুষের কোনো কাজে আসে না অথবা যে ব্যাপারে কথা বলা দরকার সে ব্যাপারে কথা না বলা। “অন্তরের অনিষ্ট থেকে” আর তা হলো অন্তরকে গাইরুল্লাহর যিকির দ্বারা ভরপুর করা অথবা কলবের ইবাদত দ্বারা গাইরুল্লাহর অভিমুখী হওয়া; যেমন, গায়রুল্লাহর সাথে কামনা, ভীতি ও সম্মানকে সম্পৃক্ত করা অথবা যা আল্লাহর জন্য উচিৎ তা ত্যাগ করা। “বীর্যের অনিষ্ট থেকে” অর্থাৎ যৌনাঙ্গের অনিষ্টতা থেকে, আর তা হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলা যা হারাম করেছেন এমন কাজ করা অথবা ব্যভিচারের প্রাথমিক স্তরের কোনো একটি করা; যেমন, দৃষ্টিপাত করা, স্পর্শ করা, হাটা, দৃঢ় ইচ্ছ করা এবং এরকম যা কিছু আছে। অতঃপর এই বরকতময় দো‘আয় শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গকে সংরক্ষণ করার আর্জি জানানো হয়েছে, যা আল্লাহর নি‘আমত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে তাকে এসব নি‘আমতের অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাইতে নির্দেশ দিলেন। এসব নি‘আমত থেকে আশ্রয় চাইতে আদেশ দেন নি। যেমন, তিনি (এমন) বলেন নি : “আমি আমার কর্ণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।” কেননা এটি একটি নি‘আমত এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা হয়। এটি সরাসরি খারাপ নয় যে, এর থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। কিন্তু যা এই অঙ্গ থেকে জন্মায় তার অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। আর যে উদ্দেশ্যে এ অঙ্গটিকে সৃষ্টি করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে এই অঙ্গটিকে হিফাযত করতে হবে। এর দ্বারা খারাপ কোনো কিছু করবে না এবং খারাপ কিছু ছড়াবে না। কেননা কিয়ামতের দিন সে এসব নি‘আমত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে যা আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী সত্যায়নকারী: “যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৩৬]