عن عبد الله بن جعفر رضي الله عنهما : أن النبي صلى الله عليه وسلم أمهل آل جعفر ثلاثا، ثم أتاهم، فقال: «لا تبكوا على أخي بعد اليوم» ثم قال: «ادعوا لي بني أخي» فجيء بنا كأننا أفْرُخٌ فقال: «ادعوا لي الحلاق» فأمره، فحلق رؤوسنا».
[صحيح] - [رواه أبو داود والنسائي الكبرى وأحمد]
المزيــد ...
আব্দুল্লাহ ইবন জা‘ফর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জা‘ফর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পরিবারকে (তার শহীদ হওয়ার পরে সে শোকের ব্যাথা ভুলতে) তিনদিন সময় দিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি তাদের কাছে গেলেন এবং বললেন, “আজকের পরে তোমরা আমার ভাইয়ের জন্য কাঁদবে না।” অতঃপর তিনি বললেন, “আমার ভাইয়ের সন্তানদেরকে ডাকো।” ফলে আমাদেরকে ডেকে আনা হলো, যেনো আমরা মুরগীর ছানার মতো হয়ে পড়ছিলাম (চিন্তা ও শোকে বিহ্বল হওয়ায়)। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একজন নাপিতকে ডাকো। অতঃপর তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন। ফলে সে আমাদের মাথা মুণ্ডন করে দিয়েছিল।
[সহীহ] - [এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন। - এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।]
হাদীসের অর্থ: “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জা‘ফরের পরিবারকে তিনদিন সময় দিয়েছিলেন।” মুতার যুদ্ধে জা‘ফর ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু শহীদ হওয়ার পরে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবারের কাছে তিনদিন পরে গিয়েছিলেন। তিনি তাদেরকে তিনদিন অবকাশ দেওয়ার কারণ হলো যাতে তাদের অন্তর ভালো হয় এবং চিন্তা ও শোক দূর হয়। অতঃপর তিনি বললেন, “আজকের পরে তোমরা আমার ভাইয়ের জন্য কাঁদবে না।” অর্থাৎ তিনি তিনদিনের পরে কাঁদতে নিষেধ করেছেন। কেননা কোনো কিছুর প্রথম আঘাত ও শোকের ব্যপ্তি দীর্ঘায়িত হতে পারে না এবং সারাজীবন চলতে পারে না। এখানে নিষেধাজ্ঞা মাকরূহ তানযিহী অর্থে। কেননা তিনদিনের অধিক কাঁদা বৈধ; যদি না ক্রন্দনের সাথে হারামের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। অতঃপর তিনি বললেন, “আমার ভাইয়ের সন্তানদেরকে ডাকো।” তারা হলেন, মুহাম্মাদ, আব্দুল্লাহ ও ‘আওফ। “ফলে আমাদেরকে ডেকে আনা হলো, যেনো আমরা পাখির ছানার মতো হয়ে পড়েছিলাম।” আল-ফারখ অর্থ পাখির ছানা। তাদের পিতা হারানোর বেদনা ও চিন্তায় তারা এমন হয়েছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “একজন নাপিত ডাকো। তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন, ফলে নাপিত আমাদের মাথা মুণ্ডন করে দিল।” অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মাথা মুণ্ডন করতে আদেশ দিয়েছেন, ফলে তাদের মাথা মুণ্ডন করা হয়েছিল। যেহেতু তাদের মাতা আসমা বিনত উমাইস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তার স্বামীর শাহাদাতে বিষন্ন থাকায় তাদের মাথার চুল আঁচড়িয়ে দিতে পারতেন না। তাই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রতি সদয় হয়েছিলেন, যাতে তাদের মাথা ময়লা ও উকুন থেকে মুক্ত থাকে। অতঃপর মাথার চুল মুণ্ডন করায় তা তাদের মায়ের জন্য উপকার, কল্যাণ ও একটু আরামের কারণ হলো। কেননা তিনি আপতিত বিপদের কারণে তার সন্তানদের ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছিলেন না। সর্তকতা: উল্লেখ্য যে, বিপদাপদে মাথা মুণ্ডন করা জায়েয নেই। এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেসব নারীকে লা‘নত দিয়েছেন যারা (বিপদে) চিৎকার করে কাদেঁ, মাথা মুণ্ডন করে এবং যারা জামা-কাপড় ছিড়েঁ ফেলে।” হাদীসে উল্লিখিত আল-হালিকাহ অর্থ বিপদে যে মাথা মুণ্ডন করে। আশ-শাকাহ অর্থ যে বিপদে পতিত হলে জামা-কাপড় ছিড়েঁ ফেলে। আস-সালিকাহ অর্থ যে বিপদের সময় উচ্চস্বরে চিৎকার করে কাঁদে। তবে হাদীসে উল্লিখিত জা‘ফর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মৃত্যুর পরে তার সন্তানদের মাথা মুণ্ডনের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তাদের মা তাদের মাথার চুলের দেখাশোনা করতে না পারায় তাদের মাথায় উকুন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মাথা মুণ্ডন করার আদেশ দিয়েছিলেন। এখানে বিপদের কারণে মাথা মুণ্ডানো হয় নি। দেখুন, ‘আওনুল মা‘বূদ শারহি সুনানি আবী দাঊদ (১১/১৬৪); শারহু রিয়াদিস সালিহীন, ইবন ‘উসাইমীন (৬/৩৮২); শারহু সুনানি আবী দাঊদ লিল ‘আব্বাদ, ইলেকট্রনিক কপি।