عن سعيد بن جُبير، قال: قلتُ لابن عباس: إنَّ نَوْفًا البَكالي يزعم أنَّ موسى ليس بموسى بني إسرائيل، إنما هو موسَى آخر؟ فقال: كذبَ عدوُّ الله، حدثنا أُبَي بن كعب عن النبي صلى الله عليه وسلم: «قام موسى النبيُّ خطيبًا في بني إسرائيل، فسُئل أيُّ الناس أعلم؟ فقال: أنا أعلم، فعتب الله عليه، إذ لم يَرُدَّ العلم إليه، فأوحى الله إليه: أنَّ عبدًا من عبادي بمَجْمَع البحرين، هو أعلم منك. قال: يا رب، وكيف به؟ فقيل له: احمل حوتًا في مِكْتَل، فإذا فقدتَه فهو ثَمَّ، فانطلق وانطلق بفتاه يُوشِع بن نُون، وحملا حوتًا في مِكْتَل، حتى كانا عند الصخرة وضعا رءوسهما وناما، فانسلَّ الحوتُ من المِكْتَل فاتخذ سبيله في البحر سَرَبًا، وكان لموسى وفتاه عَجَبًا، فانطلقا بقية ليلتهما ويومهما، فلما أصبح قال موسى لفتاه: آتنا غداءنا، لقد لَقِينا من سفرنا هذا نَصَبًا، ولم يجد موسى مسًّا من النَّصَب حتى جاوز المكان الذي أُمِر به، فقال له فتاه: أرأيتَ إذ أوينا إلى الصخرة فإني نسيتُ الحوتَ، وما أنسانيهُ إلا الشيطانُ. قال موسى: ذلك ما كنا نَبْغي فارتدَّا على آثارِهما قصصًا. فلما انتهيا إلى الصخرة، إذا رجل مُسَجًّى بثوب، أو قال تَسَجَّى بثوبه، فسلَّم موسى، فقال الخَضِر: وأنَّى بأرضك السلام؟ فقال: أنا موسى، فقال: موسى بني إسرائيل؟ قال: نعم، قال: هل أتَّبِعُك على أن تُعَلِّمَني مما عُلِّمْتَ رُشْدًا قال: إنَّك لن تستطيع معيَ صبرا، يا موسى إني على علم من علم الله علَّمَنيه لا تعلمه أنت، وأنت على علم علَّمَكَه لا أعلمه، قال: ستجدني إن شاء الله صابرا، ولا أعصي لك أمرا، فانطلقا يمشيان على ساحل البحر، ليس لهما سفينة، فمرَّت بهما سفينة، فكلَّموهم أن يحملوهما، فعرف الخَضِر فحملوهما بغير نَوْل، فجاء عصفور، فوقع على حرف السفينة، فنقر نقرة أو نقرتين في البحر، فقال الخضر: يا موسى ما نقص علمي وعلمك من علم الله إلا كنقرة هذا العصفور في البحر، فعَمَد الخضر إلى لوح من ألواح السفينة، فنزعه، فقال موسى: قوم حملونا بغير نَوْل عَمَدتَ إلى سفينتهم فخرقتها لتُغْرِق أهلها؟ قال: ألم أقل إنك لن تستطيع معي صبرا؟ قال: لا تؤاخذني بما نسيتُ ولا تُرْهِقْني من أمري عُسْرًا -فكانت الأولى من موسى نسياناً-، فانطلقا، فإذا غُلام يلعب مع الغِلمان، فأخذ الخَضِر برأسه من أعلاه فاقتلع رأسه بيده، فقال موسى: أقتلتَ نفسا زكِيَّة بغير نفس؟ قال: ألم أقل لك إنك لن تستطيع معي صبرا؟ -قال ابن عيينة: وهذا أوكد- فانطلقا، حتى إذا أتيا أهل قرية استَطْعما أهلَها، فأَبَوْا أن يُضَيِّفوهما، فوجدا فيها جدارًا يريد أن يَنْقَضَّ فأقامه، قال الخضر: بيده فأقامه، فقال له موسى: لو شئتَ لاتخذتَ عليه أجرا، قال: هذا فِراق بيني وبينك». قال النبي صلى الله عليه وسلم: «يرحمُ اللهُ موسى، لوَدِدْنا لو صبر حتى يُقَصَّ علينا من أمرهما».
[صحيح] - [متفق عليه]
المزيــد ...
সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাসকে বললাম, নাওফ আল-বাকালী দাবী করে যে, মূসা [যিনি খাযির এর সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন তিনি] বানী ইসরাঈলের মূসা নন বরং তিনি অন্য এক মূসা? (একথা শুনে) তিনি বললেন, আল্লাহর দুশমন মিথ্যা বলেছে। উবাঈ ইব্নু কা’ব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, নবী মূসা একদা বানী ইসরাঈলদের মধ্যে বক্তিতা দিতে দাঁড়ালেন। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, সবচেয়ে জ্ঞানী কে? তিনি বললেন, ‘আমি সবচেয়ে জ্ঞানী।’ মহান আল্লাহ্ তাঁকে তিরস্কার করলেন। কেননা তিনি ‘ইলমকে আল্লাহর দিকে সোপর্দ করেন নি। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর নিকট এ ওয়াহী প্রেরণ করলেন, দুই সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে আমার বান্দাদের মধ্যে এক বান্দা রয়েছে, যে তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘হে আমার রব! কীভাবে তার সাক্ষাৎ পাব?’ তখন তাঁকে বলা হল, থলের মধ্যে একটি মাছ নিয়ে নাও। অতঃপর যেখানে সেটি হারিয়ে ফেলবে সেখানেই তাকে পাবে। অতঃপর তিনি যুবক ইউশা ‘ইব্নু নূনকে সাথে নিয়ে যাত্রা করলেন। তাঁরা থলের মধ্যে একটি মাছ নিলেন। পথিমধ্যে তাঁরা একটি বড় পাথরের নিকট এসে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন। তারপর মাছটি থলে হতে বেরিয়ে গেল এবং সুড়ঙ্গের মত পথ করে সমুদ্রে চলে গেল। এ ব্যাপারটি মূসা ও তাঁর খাদিম-এর জন্য ছিল আশ্চর্যের বিষয়। অতঃপর তাঁরা তাদের বাকী দিন ও রাতভর চলতে থাকলেন। পরে ভোরবেলা মূসা তাঁর খাদিমকে বললেন, ‘আমাদের নাশতা নিয়ে এস, আমরা আমাদের এ সফরে খুবই ক্লান্ত অনুভব করছি। আর মূসাকে যে স্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সে স্থান অতিক্রম করার পূর্বে তিনি ক্লান্তি অনুভব করেন নি। তারপর তাঁর সাথী তাঁকে বলল, ‘আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন পাথরের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম?’ মূসা বললেন, ‘আমরা তো সেই স্থানটিরই খোঁজ করছিলাম।’ অতঃপর তাঁরা তাঁদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললেন। তাঁরা সেই পাথরের নিকট পৌঁছে দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তি কাপড় মুড়ি দিয়ে আছেন। অথবা তার কাপড় গায়ে জড়িয়ে আছেন। মূসা তাঁকে সালাম দিলেন। তখন খাযির বললেন, এ দেশে সালাম কোথা হতে আসল! তিনি বললেন, ‘আমি মূসা।’ খাযির প্রশ্ন করলেন, ‘বানী ইসরাঈলের মূসা?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ। তিনি আরো বললেন, “সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য আমি কি আপনাকে অনুসরণ করতে পারি?’ খাযির বললেন, “তুমি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না। হে মূসা! আল্লাহর ‘ইলমের মধ্যে আমি এমন এক ‘ইলম নিয়ে আছি যা তিনি কেবল আমাকেই শিখিয়েছেন, যা তুমি জান না। আর তুমি এমন ‘ইলমের অধিকারী, যা আল্লাহ তোমাকেই শিখিয়েছেন, তা আমি জানি না।” ‘মূসা বললেন, “আল্লাহ্ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আমি আপনার আদেশ অমান্য করব না। অতঃপর তাঁরা দু’জন সমুদ্র তীর দিয়ে চলতে লাগলেন, তাঁদের কোন নৌকা ছিল না। ইতোমধ্যে তাঁদের নিকট দিয়ে একটি নৌকা যাচ্ছিল। তাঁরা নৌকাওয়ালাদের সাথে তাদের তুলে নেয়ার কথা বললেন। তারা খাযিরকে চিনতে পারল এবং ভাড়া ব্যতিরেকে তাঁদের নৌকায় তুলে নিল। তখন একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকার এক প্রান্তে বসে একবার কি দু’বার সমুদ্রে তার ঠোঁট ডুবাল। খাযির বললেন, ‘হে মূসা! আমার এবং তোমার জ্ঞান (সব মিলেও) আল্লাহর জ্ঞানের তুলনায় চড়ুই পাখির ঠোঁটে যতটুকু পানি এসেছে তার চেয়েও কম।’ অতঃপর খাযির নৌকার তক্তাগুলোর মধ্য থেকে একটি খুলে ফেললেন। মূসা বললেন, এরা আমাদের বিনা ভাড়ায় আরোহণ করিয়েছে, আর আপনি আরোহীদের ডুবিয়ে দেয়ার জন্য নৌকাটি ছিদ্র করে দিলেন?’ খাযির বললেন, “আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না?” মূসা বললেন, ‘আমার ত্রুটির জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার ব্যাপারে অধিক কঠোর হবেন না।’ প্রথমটি ছিল মূসার ভুলের কারণে। অতঃপর তাঁরা দু’জন (নৌকা থেকে নেমে) চলতে লাগলেন। (পথে) একটি বালক অন্যান্য বালকের সাথে খেলা করছিল। খাযির তার মাথার উপর দিক দিয়ে ধরলেন এবং হাত দিয়ে তার মাথা ছিন্ন করে ফেললেন। মূসা বললেন, ‘আপনি হত্যার অপরাধ ছাড়াই একটি নিষ্পাপ জীবন নাশ করলেন ?’ খাযির বললেন “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কখনো ধৈর্য ধরতে পারবে না?” ইব্ন ‘উয়ায়নাহ বলেন, এটা ছিল পূর্বের চেয়ে অধিক জোরালো বাক্য। “তারপর আবারো চলতে লাগলেন; চলতে চলতে তারা এক গ্রামের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট খাদ্য চাইলেন কিন্তু তারা তাঁদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। অতঃপর সেখানে তাঁরা ধ্বসে যাওয়ার উপক্রম এমন একটি প্রাচীর দেখতে পেলেন। খাযির তাঁর হাত দিয়ে সেটি দাঁড় করে দিলেন। মূসা বললেন, “আপনি ইচ্ছে করলে এর জন্য মজুরী নিতে পারতেন। তিনি বললেন, ‘এখানেই তোমার আর আমার মধ্যে সম্পর্কের অবসান।” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা মূসার উপর রহম করুন। আমাদের কতই না মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হতো যদি তিনি সবর করতেন, তাহলে আমাদের নিকট তাঁদের আরো ঘটনাবলী বর্ণনা করা হতো।
[সহীহ] - [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]
সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র বলেন, তাকে ইব্নু ‘আব্বাস সংবাদ দেন যে, এক লোক যাকে নাওফ আল-বাকালী বলে নাম করণ করা হয়। সে দাবী করে, যে মূসা খাযির এর সাক্ষাৎ লাভ করেছিল সে বানী ইসরাঈলের মূসা নন বরং তিনি অন্য এক মূসা? (একথা শুনে ইবন আব্বাস বললেন, আল্লাহর দুশমন মিথ্যা বলেছে। এ কথাটি তার থেকে হুমকি ও ভিতিস্বরূপ প্রকাশ পেয়েছে। নাওফ সম্পর্কে অপবাদ দেওয়ার জন্য নয়। কারণ, ইবন আব্বাস কথাটি রাগের অবস্থায় বলেছিলেন। আর রাগের সময়ের শব্দ অধিকাংশ সময় বাস্তবতা বিবর্জিত হয়ে থাকে। আর তাকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করার কারণ হলো সে অবাস্তব কথা বলেছে। এ দ্বারা তার ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলাকে সাব্যস্ত করে না। তারপর তিনি নাওফের অসত্য বলার ওপর দলিল দেন যে, উবাঈ ইব্নু কা’ব তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, মূসা একদা বানী ইসরাঈলদের মধ্যে বক্তিতা দিতে দাঁড়ালেন। তখন এক লোক তাকে জিজ্ঞেস করল, সবচেয়ে জ্ঞানী কে? তিনি বললেন, ‘আমি সবচেয়ে জ্ঞানী।’এটি মূসা আলাইহিস সালাস তার বিশ্বাস অনুযায়ী বলেছেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তিরস্কার করলেন। কেননা তিনি ‘ইলমকে আল্লাহর দিকে সোপর্দ করেন নি। এ কথা বলেননি যে, আল্লাহই ভালো জানেন। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর নিকট এ ওয়াহী প্রেরণ করলেন, দুই সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে আমার বান্দাদের মধ্যে এক বান্দা রয়েছে, যাকে খাজির বলে নামককরণ করা হয়। সে তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘হে আমার রব! কীভাবে তার সাক্ষাৎ পাব?’ তখন তিনি তাঁকে বললেন, থলের মধ্যে একটি মাছ নিয়ে নাও। অতঃপর যেখানে তুমি মাছটি হারিয়ে ফেলবে সেখানেই তাকে পাবে। অতঃপর মূসা তার একজন খাদেম যার নাম ইউশা ‘ইব্নু নূনকে সাথে নিয়ে যাত্রা আরম্ভ রলেন। আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তাঁরা থলের মধ্যে একটি মাছ নিলেন। পথিমধ্যে তাঁরা যখন সমূদ্রের তীরে একটি বড় পাথরের নিকট এসে পৌঁছলেন, তারা দুইজন তাদের মাথা যমীনে রেখে শুইলেন এবং তারা ঘুমিয়ে পড়লেন। এ সময় মাছটি থলে হতে বেরিয়ে গেল এবং সুড়ঙ্গের মত পথ করে সমুদ্রে চলে গেল। আল্লাহ তা‘আলা মাছের যাওয়া পথে পানি প্রবাহিত হওয়াকে বন্ধ করে দিলেন। ফলে তা একটি সুড়ঙ্গের মতো হয়ে গেল। মাছটি জীবিত হওয়া এবং পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে সেখানে রাস্তা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ব্যাপারটি মূসা ও তাঁর খাদিম-এর জন্য ছিল আশ্চর্যের বিষয়। অতঃপর তাঁরা তাদের বাকী দিন ও রাতভর চলতে থাকলেন। তারপর যখন ভোর হলো তখন মূসা তাঁর খাদিমকে বললেন, ‘আমাদের নাশতা নিয়ে এস, আমরা আমাদের এ সফরে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আর মূসাকে যে স্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সে স্থান অতিক্রম করার পূর্বে কোন ক্লান্তি অনুভব করেন নি। স্থানটি অতিক্রম করার পর তাঁর ক্ষুধা পেল এবং ক্লান্তি অনুভব হল। তারপর তাঁর খাদেম তাঁকে বলল, আমরা যখন পাথরের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, তখন আমি মাছটি হারিয়ে ফেলছি। মূসা বললেন, ‘আমরা তো সেই স্থানটিরই খোঁজ করছিলাম।’ কারণ, এটিই হলো খাজিরকে পাওয়ার আলামত। অতঃপর তাঁরা যে রাস্তা দিয়ে এসেছিল সে রাস্তা দিয়ে ফিরে যেতে আরম্ভ করল এবং তারা তাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে চলতে আরম্ভ করলেন। তাঁরা সেই পাথরের নিকট পৌঁছে দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তির পুরো শরীর কাপড় দিয়ে ঢাকা। মূসা তাঁকে সালাম দিলেন। তখন খাযির বললেন, এ দেশে সালাম কোথা হতে আসল! অর্থাৎ আমার এ যমীনে কি সালাম আছে? এটি আশ্চর্যজনক প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয়, ঐ যমীনের অধিবাসীগণ তখনকার সময়ে মুসলিম ছিল না। তারপর মূসা খাযিরকে বললেন, ‘আমি মূসা।’ খাযির তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি কি সে মূসা যাকে বানী ইসরাঈলের নিকট পাঠানো হয়েছে?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ। এতে প্রমাণিত হয় যে, নবীগণ এবং অন্য কেউ গায়েব জানেন না। তবে তারা ততটুকু জানেন যতটুকু তাদেরকে আল্লাহ জানান। কারণ, খাযির যদি সব গাইবি বিষয় জানতো তাহলে জিজ্ঞাসা করার পূর্বে মূসাকে চিনতো। এটিই হলো প্রমান্য স্থান যে কারণে ইবন আব্বাস হাদীসটি উল্লেখ করেন। তারপর মূসা তাকে আরো বললেন, “আমি কি আপনার অনুসরণ করব যাতে আপনাকে আল্লাহ যে ইলম দান করেছেন তা থেকে আমাকে শেখান। তার নবী হওয়া এবং শরী‘আত প্রণেতা হওয়া অন্যের থেকে শিক্ষা করার পরিপন্থী নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তা দীনের অধ্যায়সমূহে শর্ত না হয়। কারণ, রাসূলের জন্য উচিত হলো, তাকে যাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে তাদের থেকে এবং সে দীনের মূলনীতি ও শাখাসমূহ বিষয়ে অধিক জ্ঞানী হওয়া যে দীন নিয়ে তাকে প্রেরণ করা হয়েছে সে বিষয়ে অধিক জ্ঞানী হওয়া। সবকিছু থেকে অধিক জ্ঞানী হওয়া জরুরি নয়। খাযির উত্তর দিলেন, “তুমি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না। কারণ, আমি এমন কিছু কাজ করি, তার বাহ্যিক দিক মন্দ আর ভিতরের ইলম আয়ত্ব করা যায় না। তারপর সে বলল, হে মূসা! আল্লাহর ‘ইলমের মধ্যে আমি এমন এক ‘ইলম নিয়ে আছি যা তিনি কেবল আমাকেই শিখিয়েছেন, যা তুমি জান না। আর তুমি এমন ‘ইলমের অধিকারী, যা আল্লাহ তোমাকেই শিখিয়েছেন, তা আমি জানি না।” তখন ‘মূসা তাকে বললেন, “আল্লাহ্ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন, আমি আপনার ওপর কোন আপত্তি করব না। আর আমি আপনার কোন আদেশ অমান্য করব না। অতঃপর তাঁরা দু’জন সমুদ্র তীর দিয়ে চলতে লাগলেন, তাঁদের দু্ইজনের জন্য কোন নৌকা ছিল না। ইতোমধ্যে তাঁদের নিকট দিয়ে একটি নৌকা যাচ্ছিল। তাঁরা নৌকাওয়ালাদের সাথে তাদের তুলে নেয়ার কথা বললেন। নৌকাওয়ালা খাযিরকে চিনতে পারল এবং ভাড়া ব্যতিরেকে তাঁদের দুইজনকে নৌকায় তুলে নিল। তখন একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকার এক প্রান্তে বসে একবার কি দু’বার সমুদ্রে তার ঠোঁট ডুবাল। খাযির বললেন, ‘হে মূসা! আমার এবং তোমার জ্ঞান (সব মিলেও) আল্লাহর জ্ঞানের তুলনায় চড়ুই পাখির ঠোঁটে যতটুকু পানি এসেছে তার চেয়েও কম।’ অতঃপর খাযির নৌকার তক্তাগুলোর মধ্য থেকে একটি কুড়াল দ্বারা খুলে ফেললেন। মূসা বললেন, এরা আমাদের বিনা ভাড়ায় আরোহণ করিয়েছে, আর আপনি আরোহীদের ডুবিয়ে দেয়ার জন্য নৌকাটি ছিদ্র করে দিলেন?’ খাযির তাকে ইতিপূর্বে যা বলেছিল তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, “আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না?” মূসা বললেন, ‘আমার ত্রুটির জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার ব্যাপারে অধিক কঠোর হবেন না।’ কারণ, তাহলে তা আপনার অনুসরণ করাকে কঠিন করে দেবে। সুতরাং প্রথম মাসআলা ছিল মূসা থেকে ভূলে। অতঃপর তাঁরা দু’জন (নৌকা থেকে নেমে) চলতে লাগলেন। (পথে) একটি বালককে পেলেন যে অন্যান্য বালকের সাথে খেলা করছিল। খাযির তার মাথার উপর দিক দিয়ে ধরলেন এবং হাত দিয়ে তার মাথা ছিন্ন করে ফেললেন। মূসা বললেন, ‘আপনি একটি পবিত্র জীবনকে হত্যা করে ফেললেন। তাকেতো আমরা এমন কোন অপরাধ করতে দেখলাম না যাতে তাকে হত্যা করা যায়। অথবা কাউকে হত্যা করছে তার বদলায় তাকে হত্যা করা যায়? খাযির মূসাকে বললেন “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কখনো ধৈর্য ধরতে পারবে না?” এবার সে ‘লাকা’ শব্দ বাড়িয়েছেন যা দ্বারা সে ভৎসনার মাত্রা বাড়িয়ে দিলেন। এ কারণে হাদীসটির একজন বর্ণনাকরী সুফিয়ান ইব্ন ‘উয়ায়নাহ বলেন, এটা ছিল পূর্বের চেয়ে অধিক জোরালো। এ বারে ‘তোমার জন্য’ কথাটি বাড়ানোর দ্বারা তার ওপর তিনি প্রমাণ পেশ করেন। “তারপর আবারো চলতে লাগলেন; চলতে চলতে তারা এক গ্রামের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট খাদ্য চাইলেন কিন্তু তারা তাঁদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। ফলে ঐ গ্রামে কোন মেহমানদারি ও আশ্রয় তারা পেল না। অতঃপর সেখানে তাঁরা ধ্বসে যাওয়ার উপক্রম এমন একটি প্রাচীর দেখতে পেলেন। খাযির তাঁর হাত দিয়ে সেটি দাঁড় করে দিলেন। মূসা খাযিরকে বললেন, “আপনি ইচ্ছে করলে এর জন্য মজুরী নিতে পারতেন। তাহলে তা আমাদের সফরে সহায়ক হত। তখন খাযির মূসা আলাইহিস সালামকে বললেন, এই তৃতীয় প্রশ্ন আপনার আর আমার মধ্যে পৃথক হওয়ার কারণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা মূসার উপর রহম করুন। আমরা আশা ও পছন্দ করেছি যদি তিনি সবর করতেন, তাহলে আমাদের নিকট তাঁদের মাঝে সংঘটিত ইলম ও হিকমাতের আরো অনেক ঘটনাবলী বর্ণনা করা হতো।