عن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه قال: دخلتُ عَلى النَبيِّ -صلَّى الله عليه وسلَّم- أنَا ورجلاَن مِنْ بَنِي عَمِّي، فَقَال أحدهما: يا رسول الله، أمرنا على بعض ما ولاك الله عز وجل وقال الآخر مثل ذلك، فقال: «إِنَّا وَالله لاَ نُوَلِّي هَذَا العَمَلَ أَحَدًا سَأَلَهُ، أَو أَحَدًا حَرِصَ عَلَيهِ».
[صحيح] - [متفق عليه]
المزيــد ...
আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমি এবং আমার চাচাতো দু’ভাই নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম। সে দু’জনের মধ্যে একজন বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! মহান আল্লাহ আপনাকে যে সব শাসন-ক্ষমতা দান করেছেন, তার মধ্যে কিছু (এলাকার) শাসনভার আমাকে প্রদান করুন।’ দ্বিতীয়জনও একই কথা বলল। উত্তরে তিনি বললেন, ““আল্লাহর কসম! আমরা এমন কাউকে এ দায়িত্ব দেই না যে তা (সরকারী পদ) প্রার্থনা করে অথবা তার প্রতি লোভ রাখে।”
[সহীহ] - [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]
যে ব্যক্তি নেতৃত্ব চায় বা তার প্রতি লোভ করে তাকে নেতা বানানো নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে এ হাদীস। দুই ব্যক্তি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আল্লাহ তা‘আলা তাকে যার ওপর দায়িত্বশীল করেছে তাতে তাদের আমীর বানানোর জন্য আবেদন পেশ করলেন, তখন তিনি বললেন, “আল্লাহর কসম! আমরা এমন কাউকে এ দায়িত্ব দেই না যে তা (সরকারী পদ) প্রার্থনা করে অথবা তার প্রতি লোভ রাখে।” অর্থাৎ যে আমীরগিরী তলব করে এবং লোভ করে এমন কাউকে আমরা দায়িত্বশীল বানাই না। কারণ, যে তলব করে বা লোভ করে তার উদ্দেশ্য অনেক সময় ক্ষমতা লাভ করা হতে পারে জন কল্যাণ নয়। যেহেতু তাকে এ ধরনের অপবাধে অপবাধ দেওয়া যায়, তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের লোককে নেতা বানাতে নিষেধ করেন এবং তিনি বলেন, “আল্লাহর কসম! যে সরকারী পদ চেয়ে নেয় অথবা তার প্রতি লোভ রাখে, তাকে অবশ্যই আমরা এ কাজ দিই না। এ হাদীসের আলোচ্য বিষয়টি আব্দুর রহমান ইবন সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসকে সমর্থন করে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি দায়িত্ব চেয়ো না। কারণ, যদি চাওয়া ছাড়া তোমাকে শাসন ক্ষমতা দেওয়া হয়, তার ওপর তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর যদি তোমার চাওয়ার ওপর নির্ভর করে দেওয়া হয় তবে তোমাকে তার দিকে সপর্দ করা হবে। যখন কোন ব্যক্তি কোন শহর বা যমীনের কোন অংশের যাতে আবাদী বা এ ধরনের কিছু রয়েছে তার ওপর শাসক বানানোর আবেদন দেয়, তখন দায়িত্বশীলদের জন্য তাকে আমীর বানানো উচিত হবে না। এমনকি যদি সে যোগ্য ব্যক্তিও হয়ে তাকে। অনুরূপভাবে যদি কোন ব্যক্তি বিচারক হওয়ার জন্য এ কাজের দায়িত্বশীল যেমন আইন মন্ত্রীর নিকট গিয়ে বলল, আমাকে অমুক শহরের বিচারের দায়িত্ব দিন, তাহলে তাকে বিচারক বানানো যাবে না। তবে যদি কোন ব্যক্তি এক শহর থেকে অপর শহরে বদলী হওয়া কামনা করে তার বিষয়টি এ হাদীসের অন্তভুর্ক্ত নয়। কারণ, এ লোক আগেই দায়িত্বশীল হয়ে আছে তবে সে শুধু অন্য স্থানে বদলী হতে চাচ্ছে। কিন্তু যদি স্থান পরিবর্তন দ্বারা তার উদ্দেশ্য সে শহরের লোকদের ওপর কর্তৃত্ব করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা অবশ্যই বারণ করবো। কারণ, আমলের বিবেচনা নিয়তের ওপরই নির্ভরশীল। যদি কোন প্রশ্নকারী প্রশ্ন করে বলে আযীযে মিসরকে লক্ষ্য করে ইউসুফ আল্লাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী-“আমাকে যমীনের ধন-ভান্ডারের ওপর দায়িত্বশীল নির্ধারণ করুন। নিশ্চয় আমি সংরক্ষণকারী ও জ্ঞানী”। [সূরা ইউসূফ, আয়াত: ৫] -বিষয়ে তুমি কি জাওয়াব দেবে? আমরা দুই জাওয়াবের যে কোন একটি দ্বারা জাওয়াব দেবো। এক—এ কথা বলা যাবে যে, আমাদের পূর্বে উম্মাতদের শরী‘আত যদি আমাদের শরী‘আতের বিধানের পরিপন্থী হয়, তখন উসূলীদের প্রসিদ্ধ কায়েদা “আমাদের পূর্ববতীদের শরী‘আত আমাদেরই শরী‘আত যতক্ষণ না তা আমাদের শরী‘আতের পরীপন্থী না হয়”—এর ভিত্তিতে বলা যাবে যে, আমাদের শরী‘আত অনুযায়ী আমল হবে। আর এখানে আমাদের পূর্বের শরী‘আত আমাদের শরীয়তের পরিপন্থী। কারণ, আমাদের শরী‘আতে আছে আমরা এমন কাউকে শাসক বানাবো না যে শাসন ক্ষমতা তলব করে। দুই—ইউছুফ আলাইহিস সালাম দেখলেন যে, সম্পদ নষ্ট হবে এবং তাতে সীমালঙ্ঘন ও তামাশা করা হবে, তাই দেশকে তামাশার হাত থেকে রক্ষা করতে চাইলেন। এ ধরনের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য সাধারণত খারাপ পরিচালনা ও মন্দ পরিণতিকে দূর করা হয়ে থাকে। আর এতে কোন অসুবিধা নেই। যেমন যখন আমরা কোন ভূ-খণ্ডের আমীরকে দেখি যে, সে তার ক্ষমতা নষ্ট করছে ও মানুষ ধ্বংস করছে, তখন এ কাজের জন্য যোগ্য ব্যক্তির জন্য উচিত হল যখন দেখবে যে, সে ছাড়া আর কোন যোগ্য লোক নেই, দায়িত্বশীলদের নিকট শাসন ক্ষমতা তলব করা। সে তাকে বলবে, এখানে যে খারাপ অবস্থা রয়েছে তা দূর করতে আমাকে এ শহরের দায়িত্ব দিন। নীতি অনুসারে এ ধরণের চাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। আর উসমান ইবন আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন, আমাকে সালাতে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকদের ইমাম নিযুক্ত করুন। বললেন, তুমি তাদের ইমাম। উলামাগণ বলেন, হাদীসটি প্রমান করে যে, জন কল্যাণে ইমামতি চাওয়া বৈধ। রহমানের বান্দাদের দু‘আসমূহে যাদের আল্লাহ এ বলে প্রশংসা করেছেন যে তারা বলে, “আর আপনি আমাদের মুত্তাকীদের ইমাম বনান”। এটি অপছন্দনীয় তলব নয়। কারণ, অপছন্দনীয় তলবের সম্পর্ক দুনিয়ার নেতৃত্বের সাথে যেই যে চায় তাকে সাহায্য করা হয় না এবং তাকে দেওয়ার যোগ্যতা রাখে না।